সমাজে প্রচলিত কিছু কুসংস্কার
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। একজন মুসলিমের জীবনের সব ধরনের সমস্যার সমাধান ও দিক-নির্দেশনা ইসলাম প্রদান করেছে। অধিকাংশ মুসলিমরা সাধারণত ইসলামরে দিক-নির্দেশনাই মেনে চলেন বা চলার চেষ্ঠা করেন। কিন্তু ইসলামের বিধান মান্য করার পাশাপাশি মুসলিম সমাজে বেশ কিছু কুসংস্কারও প্রচলিত রয়েছে। অনেক মুসলিম কুসংস্কারগুলোকে ভালো মনে করেই পালন করেন। এর মাঝে কিছু কুংস্কার এমন রয়েছে যার মাধ্যমে প্রভুর সাথে শিরকও হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। চলুন মুসলিম সমাজে প্রচলিত কিছু কুসংস্কারের কথা জেনে নিই।
যেমন- একসঙ্গে কয়েকজন বন্ধু বসে গল্প-গুজব করছে। তাদের মধ্যে কেউ উপস্থিত না হলে তার সম্পর্কে পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ হতে থাকে, এমতাবস্থায় সে উপস্থিত হলে- অনেকেই বলে উঠে ‘আপনি অনেকদিন বাঁচবেন।’ কারণ একটু আগেই আপনার কথাই বলছিলাম! এমনই বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। সমাজজীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কুসংস্কার সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ এসব কুসংস্কারে বিশ্বাস ঈমানের জন্য মারাত্মক হুমকি। ইসলামে কুসংস্কারের কোনো স্থান নেই।
এমন কাজ, কথা ও প্রথা মানা যার কোনো বাস্তব ও ধর্মীয় ভিত্তি নেই। মানুষের তৈরি যুক্তিহীন এসব ভ্রান্ত বিশ্বাস, কথা, কাজ ও প্রথাকে সহজ বাংলায় কুসংস্কার বলা হয়। এসব কুসংস্কারে কারণে অনেকের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়। আবার কোথাও কুসংস্কারের কবলে জীবনহানীর ঘটনাও ঘটে। কিছু কিছু কুসংস্কার তো শিরকের পর্যায়ভূক্ত। আবার কিছু বিষয় সাধারণ বিবেক বিরোধী এবং রীতিমত হাস্যকর। মূলতঃ বাজারে ‘কি করলে কি হয়’ জাতীয় বই এসবের সরবরাহকারী। কিছু মানুষ চরম অন্ধবিশ্বাসে এগুলোকে লালন করে।
সমাজে প্রচলিত এসব কুসংস্কারের কারণে আল্লাহর ওপর আস্থা ও তার রহমতের প্রতি নির্ভরতা কমে যায়; চিরাচরিত ধর্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। মূলতঃ কুসংস্কার হলো ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরের প্রচলিত নিয়মবিধি- যার প্রতি মানুষ অন্ধবিশ্বাস স্থাপন করে সেই বিশ্বাসকে ভিত্তি করে জীবনে চলার চেষ্টা করে। কুসংস্কারজনিত অন্ধবিশ্বাসে পড়ে মানুষ নিজেদের ঈমানকে দুর্বল করে তুলছে। বস্তুত মুসলমানের জন্য আল্লাহর ওপর ভরসাই যথেষ্ট। ইসলামী শরিয়ত পরিপন্থী প্রচলিত এসব বর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্যকর্তব্য। এছাড়া কুসংস্কার বন্ধের জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো সবার ঈমানি দায়িত্ব।
কুসংস্কার প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়।’ -বুখারি শরিফ
আমরা জানি, অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কারের। ফলে সমাজে নানা রকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই অজানাকে জানতে হবে, অচেনাকে চিনতে হবে। যতদূর সম্ভব প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্ট জ্ঞান ও পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। এজন্য চাই সঠিকভাবে জ্ঞান অন্বেষণ ও বিদ্যার্জন। ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে অত্যাবশ্যক করা হয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের দ্বার বিকশিত হলেই সমাজ থেকে কুসংস্কার দূরীভূত হবে। কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি জ্ঞান রাখে আর যে জ্ঞান রাখে না, তারা উভয় কি সমান হতে পারে?’ -সূরা আল যুমার : ৯
সাধারণত গ্রামীণ এলাকার লোকজনের মাঝে কুসংস্কারের প্রভাব ও প্রবণতা একটু বেশি লক্ষ করা যায়। তবে শহুরে লোকজন এসব থেকে মুক্ত এটাও বলা যাবে না। বড় বড় খোলোয়াড়, রাজনৈতিক নেতা, প্রসিদ্ধ লেখকসহ বিভিন্ন শেণী-পেশার লোকদের মাঝেও কুসংস্কারের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। তাদের সমাজ-সংসার, আচার-অনুষ্ঠান ও দৈনন্দিন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এসব মনগড়া প্রথা ও ভ্রান্ত রীতিনীতি অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। আল্লাহর বিধান ও হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) দেখানো জীবনাচারের সঙ্গে এসব সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ইসলামী শরীয়ত এসব কুসংস্কার ও কুপ্রথাকে বিশ্বাস করা হারাম বলে অভিহিত করে তা থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) আগমনপূর্ব সময়কে কোরআনে কারিমে ‘আইয়্যামে জাহিলিয়াত’ বা অজ্ঞতা, ববর্রতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুগ বলা হয়েছে। কারণ, তৎকালীন আরব সমাজ ছিল নানা কুসংস্কারের ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এ ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে পরিশুদ্ধ করতে আল্লাহতায়ালা হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) পাঠিয়ে ঘোষণা দেন যে, ‘তিনি সেই সত্তা, যিনি স্বীয় রাসূলকে সঠিক পথ ও সঠিক তথা সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব মতবাদের ওপর এ ধর্ম তথা মতবাদ বিজয়ী হতে পারে।’ -সূরা আত তাওবা : ৩৩
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত দূরদর্শিতার সঙ্গে ঘোর অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন আরব সমাজে বিদ্যমান যাবতীয় কুসংস্কারের মূলে কুঠারাঘাত এনে সে সমাজে ইসলামের জ্যোতি বিকীরণ করেন। তিনি নবুয়ত প্রাপ্তির আগেই যাবতীয় কুসংস্কার সমাজ থেকে কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। নবুয়ত প্রাপ্তির পর তিনি তার দাওয়াতি কাজের সূচনায় জাহেলি যুগের সব কুসংস্কারকে পরিহার করে এক আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও আনুগত্য প্রদর্শনের কথা বলেন। ফলে সমাজ থেকে ধীরে ধীরে কুসংস্কারের প্রভাব কমতে থাকে- এমতাবস্থায় তিনি নবুওয়ত প্রাপ্ত হয়ে ইসলামের প্রচার করতে থাকেন। আল্লাহতায়ালা যাবতীয় কুসংস্কার থেকে মুমিনদের মুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়ে ঘোষণা করেন, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া ও মূর্তি পূজার বেদি এবং ভাগ্য নির্ণয়কারী শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো বর্জন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’-সূরা মায়িদা : ৯০
সুন্দর ও মার্জিত বিষয়াদীই ইসলামে অনুমোদিত। অন্যদিকে অসত্য, অসুন্দর ও যাবতীয় কদর্যতা ইসলামে নিষিদ্ধ। মানুষের জীবনকে সুন্দর ও শৃঙ্খলাময় করার জন্য যত রকমের সহজ-সরল দিকনির্দেশনা ও পথ রয়েছে- তার সব ইসলামে বিদ্যমান। এ কারণেই ইসলামকে মধ্যপন্থীদের ধর্ম বলা হয়। মানবতার বিরুদ্ধে যাবতীয় নিষ্ঠুরতা, অসহিষ্ণুতা ও ববর্রতার বিরুদ্ধে ইসলামই একমাত্র রক্ষাকবচ। তাই আমাদের সব ধরনের কুসংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে জীবন পরিচালনা করতে হবে। কুসংস্কারে বিশ্বাস ভীষণপাপ ও ভ্রষ্টতার কারণ। কোরআনে কারিমে এ সম্পর্কে উল্লেখ আছে, ‘পথভ্রষ্ট লোক আল্লাহর রহমত থেকে অনেক দূরে অবস্থান করবে।’
আমাদের সমাজ থেকে যাবতীয় কুসংস্কার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন ও সজাগ করতে আলেম-উলামা, মসজিদের ইমাম-খতিব, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সমাজ উন্নয়ন কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষকে ধর্ম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে। দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থে এমন অলিক ও ধরাণাপ্রসূত কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনোভাবের পরিবর্তন অতীব জরুরি।
মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সমাজে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য কুসংস্কার থেকে এখানে কয়েকটি মাত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আপনাদের নিকট যদি কিছু জানা থাকে তবে মন্তবের ঘরে সংযোগ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
(১) পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পূর্বে ডিম খাওয়া যাবে না। তাহলে পরীক্ষায় ডিম (গোল্লা) পাবে।
(২) খাবার সময় সালাম দিতে নেই।
(৩) দোকানের প্রথম কাস্টমর ফেরত দিতে নাই।
(৪) নতুন স্ত্রীকে নরম স্থানে বসতে দিলে মেজাজ নরম থাকবে।
(৫) বিড়াল মারলে আড়াই কেজি লবণ দিতে হবে।
(৬) ঔষধ খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ বললে’ রোগ বেড়ে যাবে।
(৭) জোড়া কলা খেলে জোড়া সন্তান জন্ম নিবে।
(৮) রাতে নখ, চুল ইত্যাদি কাটতে নাই।
(৯) চোখে কোন গোটা হলে ছোট বাচ্চাদের নুনু লাগাইলে সুস্থ হয়ে যাবে।
(১০) ভাই-বোন মিলে মুরগী জবেহ করা যাবে না।
(১১) ঘরের ময়লা পানি রাতে বাইরে ফেলা যাবে না।
(১২) ঘর থেকে কোন উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পর পেছন থেকে ডাক দিলে যাত্রা অশুভ হবে।
(১৩) ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি হবে।
(১৪) কুরআন মাজীদ হাত থেকে পড়ে গেলে আড়াই কেজি চাল দিতে হবে।
(১৫) ছোট বাচ্চাদের দাঁত পড়লে ইঁদুরের গর্তে দাঁত ফেলতে বলা হয়, দাঁত ফেলার সময় বলতে শিখানো হয়, “ইঁদুর ভাই, ইঁদুর ভাই, তোর চিকন দাঁত টা দে, আমার মোটা দাঁত টা নে।”
(১৬) মুরগীর মাথা খেলে মা-বাবার মৃত্যু দেখবে না।
(১৭) বলা হয়, কেউ ঘর থেকে বের হলে পিছন দিকে ফিরে তাকানো নিষেধ। তাতে নাকি যাত্রা ভঙ্গ হয় বা অশুভ হয়।
(১৮) ঘরের ভিতরে প্রবেশ কৃত রোদে অর্ধেক শরীর রেখে বসা যাবে না। (অর্থাৎ শরীরের কিছু অংশ রৌদ্রে আর কিছু অংশ বাহিরে) তাহলে জ্বর হবে।
(১৯) রাতে বাঁশ কাটা যাবে না।
(২০) রাতে গাছের পাতা ছিঁড়া যাবে না।
(২১) ঘর থেকে বের হয়ে বিধবা নারী চোখে পড়লে যাত্রা অশুভ হবে।
(২২) ঘরের চৌকাঠে বসা যাবে না।
(২৩) মহিলাদের মাসিক অবস্থায় সবুজ কাপড় পরিধান করতে হবে। তার হাতের কিছু খাওয়া যাবে না।
(২৪) বিধবা নারীকে সাদা কাপড় পরিধান করতে হবে।
(২৫) ভাঙ্গা আয়না দিয়ে চেহারা দেখা যাবে না। তাতে চেহারা নষ্ট হয়ে যাবে।
(২৬) ডান হাতের তালু চুলকালে টাকা আসবে। আর বাম হাতের তালু চুলকালে বিপদ আসবে।
(২৭) নতুন কাপড় পরিধান করার পূর্বে আগুনে ছেক দিয়ে পড়তে হবে।
(২৮) নতুন কাপড় পরিধান করার পর পিছনে তাকাইতে নাই।
(২৯) বৃষ্টির সময় রোদ দেখা দিলে বলা হয় শিয়ালের বিয়ে।
(৩০) আশ্বিন মাসে নারী বিধবা হলে আর কোন দিন বিবাহ হবে না।
(৩১) খানার পর যদি কেউ গা মোচড় দেয়, তবে বলা হয় খানা না কি কুকুরের পেটে চলে যায়।
(৩২) রাতের বেলা কাউকে সুই-সূতা দিতে নাই।
(৩৩) গেঞ্জি ও গামছা ছিঁড়ে গেলে সেলাই করতে নাই।
(৩৪) খালি ঘরে সন্ধ্যার সময় বাতি দিতে হয়। না হলে ঘরে বিপদ আসে।
(৩৫) গোছলের পর শরীরে তেল মাখার পূর্বে কোন কিছু খেতে নেই।
(৩৬) মহিলার পেটে বাচ্চা থাকলে কিছু কাটা-কাটি বা জবেহ করা যাবে না।
(৩৭) পাতিলের মধ্যে খানা থাকা অবস্থায় তা খেলে পেট বড় হয়ে যাবে।
(৩৮) কোন ব্যক্তি বাড়ি হতে বাহির হলে যদি তার সামনে খালি কলস পড়ে যায় বা কেউ খালি কলস নিয়ে তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করে তখন সে যাত্রা বন্ধ করে দেয়, বলে আমার যাত্রা আজ শুভ হবে না।
(৩৯) ছোট বাচ্চাদের হাতে লোহা পরিধান করাতে হবে।
(৪০) রুমাল, ছাতা, হাত ঘড়ি ইত্যাদি কাউকে ধার স্বরূপ দেয়া যাবে না।
(৪১) হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে ভাগ্যে দুর্ভোগ আছে।
(৪২) হাত থেকে প্লেট পড়ে গেলে মেহমান আসবে।
(৪৩) নতুন স্ত্রী কোন ভাল কাজ করলে শুভ লক্ষণ।
(৪৪) পাখি ডাকলে বলা হয় ইষ্টি কুটুম (আত্মীয়)আসবে।
(৪৫) কাচা মরিচ হাতে দিতে নাই।
(৪৬) তিন রাস্তার মোড়ে বসতে নাই।
(৪৭) খানার সময় যদি কারো ঢেকুর আসে বা মাথার তালুতে উঠে যায়, তখন একজন আরেকজনকে বলে, দোস্ত তোকে যেন কেউ স্মরণ করছে বা বলা হয় তোকে গালি দিচ্ছে।
(৪৮) কাক ডাকলে বিপদ আসবে।
(৪৯) শুঁকুন ডাকলে মানুষ মারা যাবে।
(৫০) পেঁচা ডাকলে বিপদ আসবে।
(৫১) তিনজন একই সাথে চলা যাবে না।
(৫২) দুজনে ঘরে বসে কোথাও কথা বলতে লাগলে হঠাৎ টিকটিকির আওয়াজ শুনা যায়, তখন একজন অন্যজনকে বলে উঠে “দোস্ত তোর কথা সত্য, কারণ দেখছস না, টিকটিকি ঠিক ঠিক বলেছে।”
(৫৩) একজন অন্য জনের মাথায় টোকা খেলে দ্বিতীয় বার টোকা দিতে হবে, একবার টোকা খাওয়া যাবে না। নতুবা মাথায় ব্যথা হবে/শিং উঠবে।
(৫৪) ভাত প্লেটে নেওয়ার সময় একবার নিতে নাই।
(৫৫) নতুন জামাই বাজার না করা পর্যন্ত একই খানা খাওয়াতে হবে।
(৫৬) নতুন স্ত্রীকে স্বামীর বাড়িতে প্রথম পর্যায়ে আড়াই দিন অবস্থান করতে হবে।
(৫৭) পাতিলের মধ্যে খানা খেলে মেয়ে সন্তান জন্ম নিবে।
(৫৮) পোড়া খানা খেলে সাতার শিখবে।
(৫৯) পিপড়া বা জল পোকা খেলে সাতার শিখবে।
(৬০) দাঁত উঠতে বিলম্ব হলে সাত ঘরের চাউল উঠিয়ে তা পাক করে কাককে খাওয়াতে হবে এবং নিজেকেও খেতে হবে।
(৬১) সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই ঘর ঝাড়– দেয়ার পূর্বে কাউকে কোন কিছু দেয়া যাবে না।
(৬২) রাতের বেলা কোন কিছু লেন-দেন করা যাবে না।
(৬৩) সকাল বেলা দোকান খুলে যাত্রা (নগদ বিক্রি) না করে কাউকে বাকী দেয়া যাবে না। তাহলে সারা দিন বাকীই যাবে।
(৬৪) দাঁড়ী-পাল্লা, মাপার জিনিস পায়ে লাগলে বা হাত থেকে নিচে পড়ে গেলে সালাম করতে হবে, না হলে লক্ষ্মী চলে যাবে।
(৬৫) শুকরের নাম মুখে নিলে ৪০দিন মুখ নাপাক থাকে।
(৬৬) রাতের বেলা কাউকে চুন ধার দিলে চুন না বলে ধই বলতে হয়।
(৬৭) বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তায় যদি হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় তাহলে যাত্রা অশুভ হবে।
(৬৮) কোন ফসলের জমিতে বা ফল গাছে যাতে নযর না লাগে সে জন্য মাটির পাতিল সাদা-কালো রং করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
(৬৯) বিনা ওযুতে বড় পীর (!!) আবদুল কাদের জিলানীর নাম নিলে আড়াইটা পশম পড়ে যাবে।
(৭০) নখ চুল কেটে মাটিতে দাফন করতে হবে, কেননা বলা হয় কিয়ামতের দিন এগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
(৭১) নতুন স্ত্রীকে দুলা ভাই কোলে করে ঘরে আনতে হবে।
(৭২) মহিলাগণ হাতে বালা বা চুড়ি না পড়লে স্বামীর অমঙ্গল হবে।
(৭৩) স্ত্রীগণ তাদের নাকে নাক ফুল না রাখলে স্বামীর বেঁচে না থাকার প্রমাণ।
(৭৪) দা, কাচি বা ছুরি ডিঙ্গিয়ে গেলে হাত-পা কেটে যাবে।
(৭৫) গলায় কাটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরে মাপ চাইতে হবে।
(৭৬) বেচা কেনার সময় জোড় সংখ্যা রাখা যাবে না। যেমন, এক লক্ষ টাকা হলে তদস্থলে এক লক্ষ এক টাকা দিতে হবে। যেমন, দেন মোহর (কাবীন) এর সময় করে থাকে, একলক্ষ এক টাকা ধার্য করা হয়।
(৭৭) বন্ধু মহলে কয়েকজন বসে গল্প-গুজব করছে, তখন তাদের মধ্যে অনুপস্থিত কাউকে নিয়ে কথা চলছে, এমতাবস্থায় সে উপস্থিত হলে, কেউ কেউ বলে উঠে “দোস্ত তোর হায়াত আছে।” কারণ একটু আগেই তোর কথা বলছিলাম।
(৭৮) হঠাৎ বাম চোখ কাঁপলে দুখ: আসে।
(৭৯) বাড়ী থেকে কোথাও জাওয়ার উদ্দেশে বেড় হলে সে সময় বাড়ির কেউ পেছন থেকে ডাকলে অমঙল হয়।
(৮০) স্বামীর নাম বলা জাবে না এতে অমঙল হয়।
(৮১) বাছুর এর গলায় জুতার টুকরা ঝুলালে কারো কু দৃষ্টি থেকে বাচা যায়।
No comments