Header Ads

Header ADS

পিলখানা হত্যাকান্ড ► কেঁদেছে বাংলাদেশ! অনেক প্রশ্নের জবাব নেই!!




২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি। ৩৬ ঘণ্টার নারকীয় বিডিআর হত্যাযজ্ঞে ঝরে গিয়েছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৭ জন চৌকস অফিসারসহ ৭৫টি তাজা প্রাণ। রেহাই পাননি তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও।হত্যার আগে তাদের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। পানির ট্যাংকি, বাথরুম কিংবা গাড়ির ভেতরে লুকিয়েও প্রাণ রক্ষা করতে পারেননি তারা। শিকারি কুকুরের মত গন্ধ শুঁকে শুঁকে বের করে এনে একে একে হত্যা করা হয় তাদের।
হত্যা সংক্রান্ত  কিছু মারাত্ত্বক প্রশ্ন-

প্রশ্ন জানার আগে দেখুন কিছুু ছবিঃ 

১,কেন প্রধানমন্ত্রী ২৬তারিখের ডিনারের অনুষ্ঠানে আসার দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করলেন? তাহলে তিনি কী কিছু জানতেন আগে থেকে ?
২.কেন বিদ্রোহীদের পক্ষথেকে আসা মধ্যস্ততাকারীদের নাম ও পরিচয় রেজিস্ট্রী করা হয়নি যখন তারা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সমঝোতার জন্য এসেছিলেন ?

৩.মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার সর্বশেষ কী কথোপকথন হয়েছিল ?
৪.লেফটেনেন্ট কর্নেল মুকিত কেন বিডিআর হেডকোয়ার্টার থেকে ২৫শে ফেব্রুয়ারী বিকেলে বাংলাদেশ আর্মী্র ও বিডিয়ার ডাইরেক্টরের বিরুদ্ধে টেক্সট মেসেজ পাঠালেন ?
৫.২৫ শে ফেব্রুয়ারী প্রধান মন্ত্রীর কাছে প্রেরিত ইন্টেলিজেন্স রিপোরটটি কী যা তিনি পারলামেন্টে উল্লেখ করেছিলেন ?
৬.কেন পিলখানার ৫ নং গেটে কোনও পুলিশ ও র্যা ব মোতায়েন করা হয়নি যেখানদিয়ে বিদ্রোহী যোয়ানরা পালিয়ে গিয়েছিল ?
৭.কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানক এবং আযম কে দুপুর একটায় নিয়োগ দিলেন অথচ আরও চার ঘন্টা আগেই তাকে এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল ?
৮,২৫ ও ২৬ তারিখে বিভিন্ন মসজিদের মাইক ব্যবহার করে তিন মাইল পর্যন্ত শহরবাসীদের নিরাপদ দুরুত্তে সরেযেতে যে ঘোষনা প্রদান করা হয় সেটা কার নির্দেশনায় করা হয়েছিল

৯.বিদ্রহী নেতা ডিএডি তউহীদ প্রধানমন্ত্রীকে বিডিয়ার প্রধানের ও আরও কিছু অফিসারের হত্যার কথা জানানোর পরও কেন বিষয়টা সরকার ২৬ তারিখ বিকাল অবদি গোপন রাখলেন ?
১০.বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন পিলখানার ঘটনার ব্যপারে কিছুই প্রচার করেনি যদিও অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন গুলো ব্যপকভাবে প্রচার করে যাচ্ছিল। এমনকি বাংলাদেশটেলিভিশন সংক্ষিপ্ত আকারেও কোনও সংবাদ প্রচার করেনি। কেন ?
১১. কেন বিদ্রোহীরা প্রধানমন্ত্রীকে “আমাদের নেত্রী” বলে বার বার দাবি করছিল ?
১২. বিদ্রহীরা যখন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিল তখন কেন তারা বার বার আওয়ামিলীগের দলীয় স্লোগান “জয় বাংলা” দিচ্ছিল ?
১৩. সেদিন অনেক বিদেশী বিডিয়ার হেদকোয়ার্টারে ফোন করেছিলেন তারা কারা। বাংলাদেশ গোয়েন্দা সংস্থা কী এতই দুর্বল যে ঘটনার দুই মাসের মধ্যেও সেটা বের করতে পারলনা ?
১৪. প্রধানমন্তীর পুত্র জয় ২৭শে ফেব্রুয়ারী কিছু পলাতক বিদ্রোহীর সাথে দেখা করতে কেন দুবাই এসেছিলেন ?
১৫. কেন জয় দুবাই বিমানবন্দরে প্রত্যেক পলাতক বিদ্রোহীরহাতে মোটা ইনভেলাভ ধরিয়ে দিয়েছিলেন ?(সেই ইনভেলাভ গুলোর ভেতর কি ছিল ?)
১৬. কেন জয় বাংলাদেশ আর্মীর ব্যপারে বিরুপ মন্তব্য করেছিলেন এবং এই বিদ্রোহের জন্য বাংলাদেশ আর্মী কে দায়ী করেন যখন তিনি বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার সাথে কথা বলছিলেন ?
১৭. কেন প্রধানমন্ত্রী তার ছেলে কে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে দেশে আসতে নিষেধ করেছেন ?
১৮. কেন প্রভাবশালী পার্লামেন্ট মেম্বারগন কিছু বিদেশি সরকার কে ফোন করে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন যদিনা বাংলাদেশ আর্মী বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে ?
১৯. কেন আওয়ামিলীগ নেতা মহিউদ্দীন খান আলমগির ২৭শে ফেব্রুয়ারী দেশ থেকে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ?
২০. মন্ত্রি ফারুক খান কেন বলেছিলেন যে, জঙ্গিরা বাংলাদেশের আইনবিভাগ ও সস্ত্রবাহিনীতে ঢুকে পড়েছে ?
২১. কেন সরকার ইন্সপেক্টর অফ পুলিস কে (যার জামাই বিদ্রোহের সময় নিহত হয়েছিলেন এবং মেয়ে ছিলেন বিদ্রোহিদের হাতে জিম্মি অবস্থায়) তদন্ত কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে ?
২২ . কেন নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার বিপদবানী করেছেন যে, ইংলিশ মিডিয়াম ও মিশনারি স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলুতে জঙ্গী হামলার সম্ভাবনা রয়েছে ?
২৩. কেন প্রধানমন্ত্রী আর্মীকে বিডিয়ার হেডকোয়ার্টারে অফিসার ও তাদের পরিবারবর্গকে উদ্ধার করতে ঝাটিকা অভিযানের অনুমতি দেননি?
২৪ . সি আই ডি সাক্ষ্যপ্রমান সংগ্রহের নামে বিডিয়ার হেডকোয়ার্টার থেকে কী সরাচ্ছিল ?
২৫. যখন বিডিয়ার হেডকোয়ার্টারে পুলিশদের প্রহরা দেয়ার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছিল ৩০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে তখন পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে কী ধরনের সাক্ষ্যপ্রমান সরান হয়েছিল ?
২৬. আত্মসমর্পনের পরও কেন সরাস্ট্রমন্ত্রী এবং অন্য সরকারদলীয় সদস্যরা ২৬ তারিখ রাতের অন্ধকারে বার বার বিডিয়ার হেডকোয়ার্টারে যাতায়াত করছিলেন ?
২৭ . কেন ছাত্রলীগ নেতা লিয়াকত সিকদার ঘটনার পরথেকে পলাতক ?
২৮. কেন আওামিলীগ এবং এর সমমনা দল বা প্রতিস্টহান গুলো অব্যাহতভাবে ঘটনার দোষীদের বিচার কোর্ট মার্শালের বদলে সিভিল কোর্টে হওয়ার দাবি করছে ?
২৯. কেন একটি আওয়ামি পন্থি সাংবাদিক গোস্টহী ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বাংলাদেশ আর্মীর বিপক্ষে দালালি করছে এবং পিলখানা হত্যা কান্ডের বিচার সিভিল কোর্টে হওয়ার দাবি করছে ?
৩০. কেন ক্ষমতাসীন্ দল ভারতের পত্রপত্রিকার সাথে সুরমিলিয়ে কথা বলছে ?
৩১. পিলখানা ঘটনার দিন একজন সেনা কর্মকর্তার ভাষ্যমতে সকাল সাড়ে এগারটায় হত্যাকান্ড শুরু হয় ঐ সেনাকর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর সামনে এই সীকারক্তি করেন, কিন্তু প্রশ্ন হলো ভারতীয় মিডিয়া সেদিন কিভাবে তাদের গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে সকাল দশটায় এখবর নিশ্চিত করে যে, মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ সপরিবারে নিহত হয়েছেন? কিভাবে হত্যাকান্ড ঘটার আগেই ভিনদেশী মিডিয়া এ খবর নিশ্চিত করল? এবং কিভাবে তা পরে সত্য হল? যেখানে ২৬ তারিখের আগে বাংলাদেশের মিডিয়া ও বাংলাদেশ সরকার এখবর নিশ্চিত করতে পারলনা সেখানে ভারতীয় গোয়েন্দা ও মিডিয়া কিভাবে তা নিশ্চিত করল তাও আবার ঘটনা ঘটার আগেই ?
৩২. পিলখানা হত্যাকান্ডের পর কেন বিডিয়ার জোয়ানদের মৃত্যুর হার অসাভাবিক ভাবে বেড়ে গেল ?এবং এই মৃত্যু গুলো কনোটাই স্বাভাবিক মৃত্যু নয়!
৩৩.প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, বিডিআরের তথাকথিত বিদ্রোহের পিছনে বৈধ কারণ রয়েছে। যেভাবে তথাকথিত বিদ্রোহীরা প্রথম দিন টিভি ক্যামরার সামনে এসে তাদের দাবী দাওয়ার কথা বলে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছিল, একই প্রক্রিয়াই সজীব জয় দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।কেন?

৩৪.বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিডিআর বাহিনীর অভ্যন্তরীণ এই বিদ্রোহকে ঘিরে ভারতের মতো একটি বিশাল রাষ্ট্রের এতো প্রস্তুতি কেন। আর যাই হোক এই বিদ্রোহ কোনভাবেই ভারতের জন্য নিরাপত্তা হুমকি ছিলো না। আর তাছাড়া যে বিদ্রোহের গুরুত্ব ও ভয়াবহতা (প্রধানমন্ত্রীর সংসদে প্রদত্ত ভাষ্য অনুযায়ী) প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন, যে জন্য তারা সেনা অফিসারদের রক্ষায় দ্রুত সামরিক অভিযানে না গিয়ে ৩৬ ঘন্টা যাবত হত্যাকারীদের সাথে একের পর এক বৈঠক করে ধীর স্থিরতার সাথে রাজনৈতিকভাবে সামরিক বিদ্রোহ দমন করলেন, সেই বিদ্রোহের গুরুত্ব বা ভয়াবহতা ভারত সরকারই বা কিভাবে বুঝে ফেললো ?
৩৫.বিডিআর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ আরও ১১ জন সেনা কর্মকর্তার নিহত হবার সংবাদ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল এনডিটিভিতেই সর্বপ্রথম প্রচার করা হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা যেখানে দুই দিনেও শাকিল আহমেদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে পারেনি, সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ঘন ঘন বিডিআর হেডকোর্য়াটারে যাতায়াত করে হত্যাকারীদের সাথে দফায় দফায় দেনদরবার করেও যেখানে গণহত্যার খবর পায়নি, সেখানে সুদূর ভারতে বসে ভারতীয় মিডিয়া ১২ জন অফিসারের নিহত হবার বিষয়ে কি করে নিশ্চিত হলো? তাহলে কি তাদের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টরা বিডিআর হেডকোর্য়াটারের ভেতরে অবস্থান করছিলো?
বিডিআর আইনে বিদ্রোহের বিচার
পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিডিআর আইনে বিদ্রোহের বিচারের লক্ষ্যে ২০০৯ সালের ১৫ নভেম্বর বিডিআর(বিজিবি) সারা দেশে ছয়টি বিশেষ আদালত গঠন করে। এর মধ্যে ঢাকায় সদর দফতর পিলখানায় দুইটি ও দেশের অন্যান্য স্থানে আরো চারটি আদালত স্থাপিত হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৪ নভেম্বর রাঙামাটির রাজনগরে ১২ রাইফেল ব্যাটালিয়নের বিচার শুরুর মধ্য দিয়ে বিডিআর আইনে বিদ্রোহের বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হয়।

পিলখানা হত্যাযজ্ঞের আট বছরঅতিবাহিত হলেও বিচার কাজ শেষ হয়নি আজও। তবে এবছরই পিলখানা হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ করা যাবে বলে আশা করছেন সরকার ও আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। বর্তমানে উচ্চ আদালতে এ হত্যা মামলার শুনানি চলছে।
আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি উপস্থাপন চলছে। তবে আর কয়েক কার্যদিবসের মধেই রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনও শেষ হবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। এরপরই রায়ের তারিখ নির্ধারণ ও নিম্ন আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রায় দেবেন উচ্চ আদালত। কারণ, এতবড় মামলা,অর্থাৎ এত আসামি আর কোনও মামলায় ছিল না। উচ্চ আদালতে এ মামলার কার্যদিবসের সংখ্যাই এ পর্যন্ত প্রায় এক বছরের সমান।বর্তমানে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের যুক্তি উপস্থাপন চলছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম  বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিলখানা হত্যাযজ্ঞ মামলার ডেথ রেফান্সের ওপর শুনানি চলছে।’ ৩৫৯তম কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার আদালত ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আরও  সময় চেয়ে আবেদন করলে বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম  আরও বলেন, ‘একই সাক্ষ্যে নিম্ন আদালতে কারও ফাঁসি, কারও যাবজ্জীবন ও অনেকের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। কিছু আসামি খালাস পেয়েছে। আসামি পক্ষ থেকে কিছু আইনি প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এসব প্রশ্নের জবাব দিতে প্রস্তুতি নিতে হবে। এছাড়াও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি রয়েছে। সেজন্যই সময়ের প্রয়োজন।’
রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পিলখানা হত্যাযজ্ঞ মামলার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। আসামিপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক শেষ করেছে। সরকার পক্ষে আমাদের যুক্তি উপস্থানও শেষ পর্যায়ে। এখন আমি যুক্তি উপস্থাপন করছি। আরও কিছু বাকি আছে। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল তার চুড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন করবেন আদালতের কাছে। এরপর উচ্চ আদালত রায় দেবেন।’
বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে উচ্চ আদালতের কোনও বাধ্যবাধকতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না। এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।’
আসামি পক্ষের অন্যতম আইনজীবী শামীম সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিম্ন আদালতের একই নথির ওপর উচ্চ আদালতে চারটি পর্যায়ে শুনানি চলছে। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৭১ জনকে খালাস এবং ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে নিম্ন আদালত রায় দেন। সেখানে কিছু আসামির নিয়মিত আপিল, কিছু আসামির জেল আপিল, সরকারের পক্ষ থেকে একটি সরকারি আপিল করা হয়। এসব আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি। বর্তমানে কিছু আইনি প্রশ্নে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তি উপস্থাপন করছেন। সেটাও শেষ পর্যায়ে। তাদের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে আদালত রায়ের জন্য তারিখ নির্ধারণ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘সেই রায়ের মধ্য দিয়ে উচ্চ আদালতের কার্যক্রম শেষ হবে। আগামী দু’এক মাসের মধ্যেই নিম্ন আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উচ্চ আদালত তাদের রায় দেবেন বলে আশা করি। হাইকোর্টের রায়ের পর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ চাইলে আপিল বিভাগে যেতে পারবেন।’

নৃশংস এ হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় লালবাগ থানায় সদর ব্যাটালিয়নের ডিএডি (উপ-সহকারী পরিচালক) তৌহিদুল আলমসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। অজ্ঞাতনামা হিসেবে কয়েক হাজার বিডিআর সদস্যকে আসামি করা হয়।মামলাটি পরে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর করা হয়।
২০১০ সালের ১২ জুলাই পিলখানা হত্যা মামলায় ৮২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে সম্পূরক চার্জশিটে আরও ২৬ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়াও বিস্ফোরক আইনে ৭৮৭ জনকে অভিযুক্ত করে আলাদা একটি অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। পরে রাজধানীর বখশিবাজারে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাস বসিয়ে ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি দু'টি মামলার একসঙ্গে বিচারকাজ শুরু  হয়। দীর্ঘ দুই বছর বিচার কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর পিলখানা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। এ রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন ও ২৬২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। বেকসুর খালাস দেওয়া হয় ২৭১ জনকে।

২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির কালো দিনে ওই দুর্বৃত্তদের বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতা এই সব বীর শহীদের, আত্মমর্যাদা ও দেশপ্রেমকে বিন্দুমাত্র ক্ষুণ করতে পারেনি। সেদিন পুরো জাতি এই বীরদের হারানোর শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। এই নিষ্ঠুর মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে যে গভীর বেদনা ও অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি হয়েছে তা উপশমের জন্য আমাদের পথ খুঁজতে হবে। এইসব বীর শহীদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তাদের স্মরণ আমাদের ক্ষতকে কিছুটা হলেও সারাবে। তবে তাদের জীবনাদর্শ ও দেশপ্রেম থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা উজ্জীবিত হতে পারলেই তারা বেশি খুশি হবেন।
ফেব্রুয়ারির এই দিনে আমরা অশ্রুসিক্ত নয়ন ও কৃতজ্ঞ চিত্তে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

Powered by Blogger.