ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নাত নামাজের গুরুত্বও কম নয়। কারণ সঠিক পদ্ধতিতে গুরুত্ব সহকারে সুন্নাত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শ অনুসরণ ও তাঁর প্রতি অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
নামাজে মহান মাবুদকে স্মরণ করা হয়, তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা হয়। প্রকৃতঅর্থে নামাজের কোনো প্রকারভেদ
নেই; নামাজ নামাজই। তবে গুরুত্ব বিবেচনায় শরিয়ত নামাজকে
একাধিক ভাগে ভাগ করেছে। যেমন- ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল নামাজ। নিচে এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
১-ফরজ :
ফরজ
নামাজ অবশ্যই পড়তে হবে। না পড়লে গুনাহ হবে। এ নামাজ আবার দুধরনের।
যথা- ১. ফরজে আইন। যা প্রত্যেকের জন্য আলাদাভাবে ফরজ। ফরজে আইনের অন্তর্ভুক্ত
নামাজগুলো হলো- ফজরের নামাজ; জোহরের নামাজ; আসরের নামাজ; মাগরিবের নামাজ; এশার নামাজ ও জুমার নামাজ। ২.ফরজে কিফায়া। যা আদায় করা প্রত্যেকের জন্য
আলাদাভাবে ফরজ নয়। যেমন- জানাজার নামাজ।
২-ওয়াজিব :
যে নামাজের গুরুত্ব ফরজের পরই। যেমন- দুই ঈদের নামাজ ও বিতর নামাজ
হচ্ছে ওয়াজিব। কেউ ইচ্ছাকৃত ও নিয়মিত না পড়লে গুনাহ হবে।
৩-সুন্নাত :
ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নাত নামাজের গুরুত্বও কম নয়। কারণ সঠিক
পদ্ধতিতে গুরুত্ব সহকারে সুন্নাত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শ অনুসরণ ও তাঁর প্রতি অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
ঘটে। সুন্নাত নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়, কিয়ামতের দিন কারো
ফরজ নামাজে ঘাটতি থাকলে, এ নামাজ দ্বারা আল্লাহতায়ালা সেই
ঘাটতি পূরণ করবেন। এ নামাজ আবার দুধরনের। যথা- ১. সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যা রাসুল
(স.) নিয়মিত আদায় করতেন। যেমন- ফজরের ফরজের পূর্বে ২ রাকাত; জোহরের ফরজের পূর্বে ৪ রাকাত ও পরে ২ রাকাত; মাগরিবের
ফরজের পরে ২ রাকাত; এশার ফরজের পরে ২ রাকাত এবং তারাবির
নামাজ। ২. সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা। যা রাসুল (স.) নিয়মিত আদায় করতেন না,
কখনো বিশেষ প্রয়োজনে ছেড়েও দিতেন। এ নামাজ আদায় করলে অশেষ পুণ্য
লাভ করা যায়, কিন্তু কোনো কারণে আদায় করতে না পারলে গুনাহ
হবে না। যেমন- আসরের ফরজের পূর্বে ২ রাকাত এবং এশারের ফরজের পূর্বে ২ রাকাত।
৪-নফল :
নফল নামাজ পড়লে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। অনেকের মতে, হাশরের মাঠে যদি ফরজ নামাজ প্রয়োজনের থেকে কম থাকে, তাহলে মহান আল্লাহ ফরজের পরে ওয়াজিব, সুন্নাত
ও নফল ইত্যাদি থেকে নিয়ে সেই মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা করবেন। কাজেই আপাত দৃষ্টিতে
এটা খুব একটা জরুরি মনে না হলেও প্রকৃতঅর্থে অত্যন্ত জরুরি। এ নফল নামাজই রোজ
হাশরে মানুষের জন্য বেহেশত-দোযখের সিদ্ধান্তকারী হয়ে যেতে পারে। তাহাজ্জুদ,
এশরাক, চাশত, আওয়াবিন-
এগুলো হলো গুরুত্বপূর্ণ নফল নামাজ।
No comments:
Post a Comment