মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানে কিয়ামতের যতগুলো
নিদর্শনের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে,
ইয়াজুজ-মাজুজ নামের একটি জাতির
উত্থান। এই ইয়াজুজ-মাজুজ কারা তা নিয়ে
ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন, তারা পৃথিবীর প্রথম মানব ও নবী হযরত আদম (আ.) এর বংশধর। আবার কেউ বলেছেন তারা, হযরত নুহ (আ.) এর তৃতীয় পুত্র ইয়াকেলের বংশধর। ইয়াজুজ-মাজুজ জাতিটিকে ওল্ড এবং নিউ
টেস্টামেন্টে ‘গগ ও ম্যাগগ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাইবেলে এদের নুহ (আ.) এর দুই পুত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এরা মিলে পরে একটি উপজাতি সৃষ্টি করেছিল।
তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্যে কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন।
قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا 95
তিনি বললেনঃ আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থø দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট। অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেব।
آتُونِي زُبَرَ الْحَدِيدِ حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ قَالَ انفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا 96
قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِّن رَّبِّي فَإِذَا جَاء وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكَّاء وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا 98
যুলকারনাইন বললেনঃ এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ। যখন আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত সময় আসবে, তখন তিনি একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন এবং আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুতি সত্য।
وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَجَمَعْنَاهُمْ جَمْعًا 99
আমি সেদিন তাদেরকে দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে আনব।
সুরা আম্বিয়া – আয়াত ৯৬।
حَتَّى إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُم مِّن كُلِّ حَدَبٍ يَنسِلُونَ96
যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মাজুজকে বন্ধন মুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভুমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে। কিয়ামতের আলামতগুলোর মধ্যে “ইয়াজুজ-মাজুজ”-এর উত্থান অন্যতম। কিন্ত আমাদের অনেকেই ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে ঠিকমত কিছু জানি না! এ কারণেই সংক্ষেপে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা।
টেস্টামেন্টে ‘গগ ও ম্যাগগ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাইবেলে এদের নুহ (আ.) এর দুই পুত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এরা মিলে পরে একটি উপজাতি সৃষ্টি করেছিল।
যাই হোক, ইয়াজুজ-মাজুজের জাতি পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যন্ত ভয়াবহ জাতি হিসেবেই পরিগণিত।
তারা তাদের পাশ্ববর্তী জাতিগুলোর ওপর ভয়ানক অত্যাচার চালিয়েছিল। এমনকি পুরো সভ্যতা
ধ্বংস করে দিতেও তারা ইতস্তত করেনি। কোরান, ওল্ড টেস্টামেন্ট
এবং নিউ টেস্টামেন্টের বর্ণনা অনুসারে, ইয়াজুজ-মাজুজের
বাসস্থান ছিল এশিয়ার উত্তর-পূর্বের অংশে। তারা এশিয়ার দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে
ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ তৈরি করেছিল। কোনো ইতিহাসবিদ মনে করেন, এই
সম্প্রদায়টি বসবাস করতো রাশিয়ার মস্কো অঞ্চলে। আবার অনেকের ধারণা, চীনের তিব্বত এবং আর্কটিক সাগরের পাশ্ববর্তী তুর্কিস্তানে বাস ছিল
ইয়াজুজ-মাজুজের।
পবিত্র কোরানে সুরা কাহফে ৯৪-৯৯ আয়াতে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা আছে।
قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي
الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَى أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا
وَبَيْنَهُمْ سَدًّا 94
তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্যে কিছু কর ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন।
قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا 95
তিনি বললেনঃ আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থø দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট। অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেব।
آتُونِي زُبَرَ الْحَدِيدِ حَتَّى إِذَا سَاوَى بَيْنَ الصَّدَفَيْنِ قَالَ انفُخُوا حَتَّى إِذَا جَعَلَهُ نَارًا قَالَ آتُونِي أُفْرِغْ عَلَيْهِ قِطْرًا 96
তোমরা আমাকে লোহার পাত এনে দাও। অবশেষে যখন পাহাড়ের
মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। অবশেষে যখন তা
আগুনে পরিণত হল, তখন তিনি বললেনঃ
তোমরা গলিত তামা নিয়ে এস, আমি তা এর উপরে ঢেলে
দেই।
فَمَا اسْطَاعُوا أَن يَظْهَرُوهُ وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا 97
فَمَا اسْطَاعُوا أَن يَظْهَرُوهُ وَمَا اسْتَطَاعُوا لَهُ نَقْبًا 97
অতঃপর ইয়াজুজ ও মাজুজ তার উপরে আরোহণ করতে পারল না
এবং তা ভেদ করতে ও সক্ষম হল না।
قَالَ هَذَا رَحْمَةٌ مِّن رَّبِّي فَإِذَا جَاء وَعْدُ رَبِّي جَعَلَهُ دَكَّاء وَكَانَ وَعْدُ رَبِّي حَقًّا 98
যুলকারনাইন বললেনঃ এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ। যখন আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত সময় আসবে, তখন তিনি একে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবেন এবং আমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুতি সত্য।
وَتَرَكْنَا بَعْضَهُمْ يَوْمَئِذٍ يَمُوجُ فِي بَعْضٍ وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَجَمَعْنَاهُمْ جَمْعًا 99
আমি সেদিন তাদেরকে দলে দলে তরঙ্গের আকারে ছেড়ে দেব এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করে আনব।
সুরা আম্বিয়া – আয়াত ৯৬।
حَتَّى إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُم مِّن كُلِّ حَدَبٍ يَنسِلُونَ96
যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মাজুজকে বন্ধন মুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যেক উচ্চভুমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে। কিয়ামতের আলামতগুলোর মধ্যে “ইয়াজুজ-মাজুজ”-এর উত্থান অন্যতম। কিন্ত আমাদের অনেকেই ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে ঠিকমত কিছু জানি না! এ কারণেই সংক্ষেপে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা।
ইয়াজূজ মাজূজ
সম্প্রদায় আদম (আঃ)-এর বংশধর। তারা ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে ঈসা (আঃ)-এর সময়
পৃথিবীতে প্রকাশ হবে।
শাসক যুলক্বারনাইন তাদেরকে এখন প্রাচীর দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন (সূরা কাহফ, আয়াত ৯২-৯৭)।
শাসক যুলক্বারনাইন তাদেরকে এখন প্রাচীর দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন (সূরা কাহফ, আয়াত ৯২-৯৭)।
জুলকার নাইনের পরিচয়ঃ
কোরানে
উল্লিখিত জুলকার নাইন আসলে কে তা নিয়ে গবেষক এবং দার্শনিকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
কোরান গবেষকদের কারো কারো মতে, তিনি একজন ছিলেন আল্লাহর একজন নবী।
আবার কোনো কোনো গবেষকের মতে, কোরানে বর্ণিত জুলকার নাইন হলেন
গ্রিক মহাবীর আলেকজান্ডার। অনেকে এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, জুলকার নাইন হচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে বাদশাহ হযরত সোলাইমান (আ.)। আধুনিক
গবেষকদের মতে কোরানে উল্লিখিত জুলকার নাইনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ৩টি চরিত্র নির্দেশ
করা হতে পারে:
১.
মহামতি আলেকজান্ডার।
২.
সাইরাস দি গ্রেট (পারস্যের রাজপুত্র)।
৩.
হিমায়ার সাম্রাজ্যের একজন শাসক।
কোরানের
বর্ণনা মতে, জুলকার নাইন ছিলেন একজন শাসক। আল্লাহ তাকে প্রচুর
সম্পদ দিয়েছিলেন। পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমের সব দেশ তিনি জয় করেছিলেন।
ইয়াজুজ-মাজুজ যে পাহাড়ে বাস করতো সেখানে গিয়ে তিনি তার মিশন শেষ করেন। সেখানে গিয়ে
তিনি লোকজনের এক ভিন্ন ধরনের ভাষা শুনতে পান। দোভাষীর মাধ্যমে কথা বলে জুলকার নাইন
জানতে পারেন, তারা ইয়াজুজ মাজুজের নির্যাতনের শিকার। লোকগুলো
ইয়াজুজ-মাজুজকে অবরুদ্ধ করে তাদের এবং ওই ভয়ঙ্কর জাতির মধ্যে একটি দেয়াল তৈরি করে
দিতে বলল। এরপর তিনি তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর তৈরি করে দেন।
সূরা
কাহাফ’র ৮৩-৮৬ নম্বর
আয়াতে বলা হয়েছে: ‘তারা আপনাকে
জুলকার নাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, আমি (আল্লাহ) তোমাদের
কাছে তার কিছু অবস্থা বর্ণনা করব। আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং
প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম। অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন
করলেন। অবশেষে তিনি যখন সূর্যের অস্তাচলে পৌছলেন তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল
জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম,
হে জুলকার নাইন, আপনি তাদের শাস্তি দিতে পারেন
অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।’
জুলকার নাইনের দেয়ালঃ
কোরানে
সূরা কাহাফের ৯৩ থেকে ৯৮ নম্বর আয়াতে জুলকার নাইনের এই প্রাচীর নির্মাণের কথা
উল্লেখ আছে। ধারণা করা হয় এই জাতি ধাতুর ব্যবহার জানতো। তারা হাপর বা ফুঁক নল দিয়ে
বাতাস প্রবাহিত করে ধাতুকে উত্তপ্ত করে গলাতে পারতো এবং লোহার পিণ্ড ও গলিত সীসাও
তৈরি করতে পারতো। প্রাচীরটি তৈরির পর জুলকার নাইন জনগণকে বলেছিলেন, এই দেয়ালটি চিরস্থায়ী নয়। আল্লাহ যতদিন চাইবেন এটি থাকবে। তিনি এক সময় এটি
ভেঙে ফেলবেন। প্রশ্ন হচ্ছে, দেয়ালটি আসলে কোথায়?
এ নিয়ে
ইতিহাসবিদদের মধ্যে নানা মতবিরোধ রয়েছে। এই প্রাচীরটির সঠিক অবস্থান নিয়ে এখনো
গবেষণা চলছে। একদল গবেষক মনে করেন, কোরানের বর্ণনা অনুযায়ী
এই দেয়ালটি অরুণাচলে। চীনের মহাপ্রাচীরের কথা বলেন অনেকে। তবে চীনের মহাপ্রাচীর ইট
দিয়ে তৈরি, শীশা দিয়ে নয়। অনেকে মনে করেন, যেখান থেকে সূর্য উদিত হয় সেখানে ইয়াজুজ-মাজুজের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা
করার জন্য দেয়াল তুলেছিলেন জুলকারনাইন। আর সে স্থানটি পাহাড়ের প্রাচীরের মাঝখানে।
এই বর্ণনার সাথে মিলে যায় এমন একটি দেয়াল রয়েছে কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলে।
ইতিহাসবিদরা স্বীকৃতি দেন যে এই দেয়াল তৈরি করেছিলেন আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। এটা
তৈরিতে লোহা ও তামা ব্যবহৃত হয়েছে। সেখানে একটি তোরণও রয়েছে, যা ‘কাস্পিয়ান গেট’ বা আলেকজান্ডারের গেট নামে পরিচিত।
দারিয়াল
এবং দারবেন্ত নামে দুটি শহরে এর ব্যাপ্তি। দারিয়াল রাশিয়া এবং জর্জিয়ার সীমান্তে
অবস্থিত। এটিকে বলা হয় কাজবেক পাহাড়ের পূর্ব প্রান্ত। দারবেন্ত রাশিয়ার দক্ষিণে
অবস্থিত একটি শহর। কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে নির্মিত এ দেয়ালটি তোলা
হয়েছে দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে। এ পাহাড় দুটিকে বলা হয়, ‘পৃথিবীর উঠান’। আলেকজান্ডার
নির্মিত এ দেয়ালের উচ্চতা ২০ মিটার এবং এটি ৩ মিটার (১০ ফুট) পুরু।
এখন
পর্যন্ত এই দেয়ালটিকেই জুলকার নাইনের প্রাচীর হিসেবে সবচে সম্ভাব্য ধরা হয়। এই
প্রাচীরটি সত্যিই এতোটা শক্ত যে ইয়াজুজ-মাজুজের মতো কোনো জাতির লোকের পক্ষে এটা
ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। তবে প্রতিশ্রুতি অনুসারে আল্লাহ একদিন এই দেয়াল ভেঙে দেবেন।
কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ঘটবে এই ঘটনা। তখন ইয়াজুজ-মাজুজ আবার ছড়িয়ে পড়বে
পৃথিবীতে।
ইয়াজুজ-মাজুজের ধ্বংসঃ
শেষ নবী
হযরত মুহাম্মদ (স.) এর হাদিস মতে: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘প্রতিদিন তারা প্রাচীর ছিদ্র করার কাজে
লিপ্ত হয়। ছিদ্র করতে করতে যখন পুরোটা উন্মোচনের উপক্রম হয় তখনই তাদের একজন বলে, আজ তো অনেক করলাম। চল! বাকিটা আগামীকাল করব। পরদিন আল্লাহ সেই প্রাচীরকে
আগের চেয়েও শক্ত করে দেন। অতঃপর যখন সেই সময় আসবে এবং আল্লাহ তাদের বের হওয়ার
অনুমতি দেবেন তখন তাদের একজন বলে উঠবে, আজ চল! আল্লাহ চাইলে
আগামীকাল পূর্ণ ছিদ্র করে ফেলব। পরদিন তারা প্রাচীর ভেঙে বেরিয়ে আসবে। এসে তারা
মানুষের ঘরবাড়ি নষ্ট করবে, সমুদ্রের পানি পান করে নিঃশেষ করে
ফেলবে। ভয়ে, আতঙ্কে মানুষ দূরে-দূরান্তে পালাবে। অতঃপর
আকাশের দিকে তারা তীর ছুড়বে। তীর রক্তাক্ত হয়ে ফিরে আসবে…।’
এই
সময়টা থাকবে হযরত ইসা (আ.) এর সময়। এই সময়েই আল্লাহ তাকে আবার পৃথিবীতে পাঠাবেন।
ইসাকে (আ.) আল্লাহ আদেশ করবেন লোকজনকে রক্ষা করার জন্য। এ সময় ঈসা (আ.) তাদের জন্য
বদদোয়া করবেন, যেন কোনো মহামারীতে ইয়াজুজ-মাজুজ ধ্বংস হয়। ফলে
তাদের কাঁধে এক প্রকার পোকা সৃষ্টি করে আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেবেন। তারা সবাই
মারা যাবে ও পঁচে দুর্গন্ধ হবে। সারা পৃথিবী জুড়ে তাদের লাশ থাকবে। আল্লাহ এক
ধরনের পাখি পাঠাবেন, যা ঘাড় হবে উটের ঘাড়ের সমান। লাশগুলো
তারা ‘নাহবাল’ নামক স্থানে নিক্ষেপ করবে। এরপর একটি
বৃষ্টি এসে পুরো পৃথিবীকে ধুয়েমুছে দেবে এবং পৃথিবী আবার উর্বর ভূমিতে পরিণত হবে।