জাদু ও ভাগ্যগণনা সম্পর্কে কী বলে ইসলাম?
রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি গণক কিংবা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকটে
যায় এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, সে নিশ্চিতভাবেই মুহাম্মাদের ওপর যা নাযিল হয়েছে তা
অস্বীকার করে।” [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৯৫৩২; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ৩৩৮৭]
অস্বীকার করে।” [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৯৫৩২; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ৩৩৮৭]
জাদু
ও ভাগ্যগণনা কুফর ও শির্কের পর্যায়ভুক্ত হারাম। জাদু তো পরিষ্কার কুফর এবং সাতটি
ধ্বংসাত্মক কবীরা গুনাহের অন্যতম। জাদু শুধু ক্ষতিই করে, কোনো উপকার করে
না।
জাদু শিক্ষা করা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “তারা এমন জিনিস (জাদু) শিক্ষা করে, যা তাদের
অপকারই করে, কোনো উপকার করে না”।
[সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২]
তিনি
আরো বলেন, “জাদুকর যেভাবেই আসুক না কেন সে সফল হবে
না”। [সূরা ত্বোয়াহা, আয়াত: ৬৯]
জাদু
চর্চাকারী কাফের। মহান আল্লাহ বলেন,
“সুলায়মান কুফুরী করেন নি। কিন্তু
কুফুরী করেছে শয়তানেরা। তারা মানুষকে শিক্ষা দেয় জাদু এবং বাবেলে হারূত-মারূত
নামের দু’জন মালাকের ওপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছিল
তা। ঐ ফিরিশতাদ্বয় কাউকে একথা না বলে কিছু শিক্ষা দেয় না যে, আমরা এক
মহাপরীক্ষার জন্য। সুতরাং তুমি (জাদু শিখে) কুফুরী করো না”।
[সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২]
জাদুকরের
উপর্জন অপবিত্র ও হারাম। জ্ঞানপাপী, অত্যাচারী ও দুর্বল ঈমানের লোকেরা
অন্যের সঙ্গে শত্রুতা ও জিঘাংসা চরিতার্থ করার জন্য জাদুকরদের নিকটে যায়। অনেকে
আবার জাদুর ক্রিয়া দূর করার জন্য জাদুকরের শরণাপন্ন হয়। এজন্যে যাওয়াও হারাম। বরং
তাদের উচিত ছিল আল্লাহর শরণাপন্ন হওয়া এবং আল্লাহর কালাম যেমন সূরা নাস, ফালাক ইত্যাদি
দিয়ে আরোগ্য লাভের চেষ্টা করা। গণক ও ভবিষ্যদ্বক্তা উভয়েই আল্লাহ তা‘আলাকে
অস্বীকারকারী কাফিরদের দলভুক্ত। কারণ, তারা উভয়েই গায়েবের কথা জানার দাবী
করে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ গায়েব জানে না।
অনেক
সময় তারা সরলমনা লোকদের সম্পদ লুটে নেওয়ার জন্য তাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে ফেলে।
এজন্য তারা বালুর উপর আঁকি-বুকি, চটা (বাটি বা থালা) চালান, হাতের তালুতে
ফুঁক, চায়ের পেয়ালা, কাঁচের গুলী, আয়না ইত্যাদি
উপকরণ ব্যবহার করে থাকে। এসব লোকের কথা একটা যদি সত্য হয় তো নিরানব্বইটাই হয়
মিথ্যা। কিন্তু গাফিলরা এসব ধোঁকাবাজ- মিথ্যুকদের এক সত্যকেই হাযার সত্য গণ্য করে
নিজেদের ভবিষ্যৎ ভাগ্য, বিয়ে-শাদী,
ব্যবসা-বাণিজ্যের
শুভাশুভ তাদের নিকট জানতে চায়। তারা হারানো জিনিস কোথায় কীভাবে পাওয়া যাবে তা
জানার জন্য তাদের নিকটে ছুটে যায়। যারা তাদের কাছে গিয়ে তাদের কথা বিশ্বাস করে, তারা কাফের এবং
ইসলাম থেকে বহির্ভূত।
রাসূলুল্লাহ্
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“যে ব্যক্তি গণক কিংবা ভবিষ্যদ্বক্তার
নিকটে যায় এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, সে নিশ্চিতভাবেই মুহাম্মাদের ওপর যা
নাযিল হয়েছে তা অস্বীকার করে।”
[মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৯৫৩২; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ৩৩৮৭]
যে
ব্যক্তি তারা গায়েব জানে না বলে বিশ্বাস করে কিন্তু অভিজ্ঞতা কিংবা অনুরূপ কিছু
অর্জনের জন্য তাদের নিকটে যায় সে কাফির হবে না বটে,
তবে তার চল্লিশ
দিনের সালাত কবুল হবে না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে
ব্যক্তি কোনো ভবিষ্যদ্বক্তার নিকটে যায় এবং তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে, তার চল্লিশ
দিনের সালাত কবুল হবে না”।
[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৩০; মিশকাত, হাদীস নং ৪৫৯৫]